বিদুর ব্লগজিন : প্রশান্ত মল্ল-র কবিতা



আউস খেত

তাল শাঁসের মত স্বচ্ছ
আউস খেতে পাউসের জল
বায়ু হতে অগ্নি কোণে
তিনটি কই গেল
চিরুনির দাঁড়া টেনে

পগারে কেয়াবন
নালার ধারে শরবন
কেয়া ফুলের গন্ধে
শৃঙ্গার চৈতন্যে চকচকে
যুগল কেউটে

মাথার উপর
অভিমানী খোঁপার মত
জলভরা মেঘ
নিচে কাঁকড়ার বাচ্চার মত
বিজবিজ করছে আলো

আউস খেত রূপে তুমি
আমার নয়নপথগামী। 


নিশি ঢেম্বুল

শিশু বায়েনের অকাল প্রয়াণে
পুত্রের নিশি ঢেম্বুলের ভার পড়ল
বড় জটিল বাদ্য
ব্রহ্মচর্য পালন ও হবিষান্ন গ্রহণ করে
মাঘ রজনীর দ্বিতীয় প্রহরে
চোখে সাত পুর কাপড় বেধে
এক পা গর্ভগৃহে অন্য পা নাট মনমন্দিরে রেখে
আলীঢ় ঢঙে সপ্ততাল বাজাতে হয়।

ছেলেটি এই তাল জানে না
তাই আকুল হল
তার আকুলতার কণা
জমাট যোগাদ্যা কণায় ধাক্কা দিলে
তমসা গূঢ়ম হতে গুরু গুরু রবে পরণ উঠল।


বডি পেন্টিং

নগ্ন শরীর চিত্রিত করে
বডি পেন্টিং পাঠাব
উদোম হ
আকাশের মত নিরাবরণ হল
উন্মুক্ত পিঠে বর্ধমান জেলার
রেনেলের মানচিত্র আঁকলাম
ম্যাগমার পাহাড়ের মত
তলতলে পাছায় আগ্নেয়গিরি
নারী অঙ্গ সংবর্ত মেঘে ঢাকলাম
উদরে নিজেকে আঁকলাম
পরিধিপানায় কলমা ধান
বক্ষদ্বয়ে সেঁজুতি ব্রতের আলপনা
কন্ঠে ঝড়ের মত বাক্
গন্ডে অলকা তিলকা এঁকে
ভ্রু-মধ্যে ক্লোদমনের সূর্যোদয় ---একটি ইমপ্রেশন
আঁকতে গিয়ে রঙের বিস্ফোরণ ঘটল।

ছিটকে গেলাম। মেয়ে বলল : বাছা
মায়ায় ছিলি, মহামায়ায় এলি। 


আমড়া

গৌর নিতাই
রাঙা বউ বিচিত্র পেঁচা রূপে
রাঢ়ের মেলায় ঘুরছি
বরডাঙা বা বাবলাডাঙা
কখনও বা দধিয়া বৈরাগী তলায়।

নূতন গাঁয়ের সূত্রধর
শীতের সুরধনীর মত
বাঁটালির ধারে অবশিষ্ট ছেঁটে
নানা ভাবে নির্মাণ।
ভাব মাখিয়ে অঙ্গরাগ
চাঁদে তুমি ডুবিয়ে
টুক টুকে ঢোল পড়া বউ
কল্পনা ও কৌশল
সুষুম্নাার স্পন্দন।

মেলা আলো করে
সালংকরা বধু রূপে এলে
উঠোনলক্ষ্ণী পেঁচা
আমড়া কাঠের আমিকে নেবে
এই কথায় সিঁদুরে বধু
আগ্নেয় পিচকারির মত হাসতে লাগল

কল্পান্তে, হাস্য সংবরণ করে বলল
সার নিয়েছি
এখন তুই আঁটি আর চামড়া। 



Comments