বিদুর ব্লগজিন : প্লাবন ভৌমিক-এর কবিতা
প্লাবন ভৌমিক-এর গুচ্ছ কবিতা
জবা
আলোর চূড়ায় আজ যত চুপ তত দূর নীল অন্ধকার।
কেবল ধুলোর পাশে ছল করে দাঁড়িয়েছ তুমি।
শান্ত, কিন্তু মন্থর সকাল শুধু মুছে নেয় দিগন্তের ফোঁটা ফোঁটা হিম।
তোমার নিজের চোখে আজ আর ঢেউ নেই কোনও।
শব্দ গন্ধ স্পর্শ সব খুলে যাক, দেবতা দেখুক—
জবা ফুটে উঠেছে দূরে আমাদের দিকে।
গোধূলি
গোধূলি এখন শুধু মাধবীর পদতল রাঙা।
পথ ভরে দেয় দূরে ঠাণ্ডা কাঁচা আকাশেরও খুব ছোট আলো।
আর তাই মনে হয় ওই হিম দিগন্তের রঙ ভেঙে যাবে সবই আজ।
তারই পাঁজরের মধ্যে ডুব দিয়ে বসেছিল কবে যেন আগুনের পাখি।
তার ম্লান ডানা তাও যেন শান্ত, কিন্তু ধনুকের মত বেঁকে আছে।
অস্পষ্ট আসন্ন তবু যেন তপ্ত ঘন-ঘোর দু-চোখের জল জলোচ্ছ্বাস।
তরল মুখর ওই পাশ দিয়ে ঢুকে যাচ্ছে বাতাস উন্মাদ শব্দ, শ্বাস।
জখম
এখন আবার চাঁদ ধাক্কা দিলো উঁচু থেকে তোমার জখমে।
এত রাত্রে কেন তুমি তবু অল্প অর্চনার পাশে বসে আছ।
সারা মুখে এ কেবল তারই দূর প্রার্থনার গাঢ় শব্দ,শ্বাস।
প্রায় কোনো কম্পন ছাড়াই ভেঙে ভেসে গেছে সব সাদা মেঘ।
এখনও রয়েছে তাও ওই ভরা চাঁদ, শুধু মগ্ন স্থির শূন্যের মাথায় লাল তারা।
আবার জখম থেকে অকম্মাৎ ঝাপ দিয়ে নেমে আসে যেন কত রক্তকণিকা।
নীল সোয়েটার
আজ নীল সোয়েটার ফেলে গেছ তুমি এই উদাসীন মাঠে।
এখন দুপুর তাই বাতাসের পিঠ ছুঁয়ে নেমে আসে ভেসে।
এর ওর মুখের কিনার ঘিরে ঢেউ দেয় কী যেন বিদ্যুৎ।
মুঠো করে ধরা সব স্থির নীল জড়ো হয় শান্ত স্পষ্ট গির্জার ভিতরে।
অস্পষ্ট দু-হাত তবু খুলে যায় আমাদের অজস্র শূন্যের মাঝখানে।
ঘুমন্ত মাস্তুল জুড়ে ফিরে আসে আজ খুব নিরুপায় মাধবীর বোন।
সে
ঘুরে সে তাকাল বলে তুমি আজ দুপুরের অস্পষ্ট আড়াল।
শুধু বর্ণচোরা মেঘ ভেসে যায় ক্লান্ত ঠান্ডা পাথরের দুঃখের আঘাতে।
মনে হয় ওই তার দীর্ঘ এলোমেলো দাগ বাঁকা উঁচু মুখে।
আর তার ছায়া নিয়ে অবুঝের মতো এসে বসে থাকে মাধবীর বোন।
স্পষ্ট কোনও শর্তহীন গন্ধে সব অন্তরঙ্গ অন্ধকার চাপা পড়ে যায়।
উন্মত্ত গোপন যেন দূর সুভদ্রার মাঠ। বাতাসের উঁচু ঢেউ নেই।
তবু সেই থেকে
তুমি খুব স্থির নীল গলা চেপে কথা বলছ উপদ্রুত ঘাসের জঙ্গলে।
অন্তত দুপুর তাই ধনুকের মতো বেঁকে আছে।
কী মারাত্মক সব লেখা
ReplyDelete