বিদুর ব্লগজিন।। প্রিয়াঙ্কা চৌধুরীর গুচ্ছ কবিতা।।


প্রিয়াঙ্কা চৌধুরীর গুচ্ছ কবিতা 

 

স্পর্শক  

তোমার আঙুল থেকে একেকটা অক্ষর 

তুলে এনে রাখা তার বীজমন্ত্র করে

যে মুহূর্তে রাত্রি নামে, পৃথিবী ঘুমায় 

মৃদু তার স্বর ডুবে যায়

কী কথা বলার ছিল, অথচ কী হল উচ্চারণ! 

এভাবে সমস্ত নিয়ন্ত্রণ

হাতের রেখার থেকে লক্ষ যোজন দূরে সরে

তোমার শরীর থেকে আলোর বিচ্ছুরণ

ঢুকে পড়ে তারও শরীরে... 

 

 

 অব্যর্থ

 যে বৃক্ষ ছায়া দেয়, গৃহহীন মানুষের মন

তার কাছে ঘর পায়, আর পায় অরণ্যজীবন  

 সে কি জানে সে কি জানে পাতায় পাতায় তার

সবুজের সেতু বেঁধে রাখা ?

 চকিতের দৃষ্টি বিনিময়। যা বোঝানো প্রায় অসম্ভব

 তোমাকে আশ্চর্য রেখে তৃষ্ণাকাতর প্রাণ

         শুষে নেয় তোমার বৈভব 

 

 

 মারিজুয়ানা

 যে প্রবাহ জল নয়, অথচ যে জলের মতন 

অপার্থিব সুর তার শরীরে শরীরে ভাঁজে ভাঁজে   

কোলাহল থেকে দূরে নিঃঝুম পাহাড়ি বিকেলে  

ধীরে ধীরে নেমে আসে অন্ধকার। কুয়াশা চাদর...  

কিছু তার দেখা যায়, বাকিটুকু করি অনুমান

ক্রমশ এগিয়ে যাই, ম্লান হয় সব পিছুটান    

 জেনে গেছি, বুঝে গেছি পথ নেই কোনও নিস্তারের     

আমি কি নিস্তার চাই? কীসের প্রত্যাশি তবে?    

প্রেম নাকি বিরহবোধের?

 


স্পর্শাতীত

 সীমান্তে দাঁড়িয়ে আছি।

ও’ প্রান্তে যা যা ঘটে কিছু তার নেই অনুমান

মাঝখানে শীর্ণ নদীটি। আর কিছু কিছু জল হাওয়া তার। 

কাঁটা কি ফুটেছে হাতে? বিন্দুমাত্র রক্তক্ষরণ?

কার্যত ঠেকিয়ে রাখি, প্রতিহত করি আবাহন

 

যেভাবে যেটুকু আসে, দেশ-কাল সীমানা ছাড়িয়ে

মন্দ্র-মধ্য-তার সপ্তক

আমাকে আক্রান্ত করে, কিংবা অলক্ষ্যে হাসে

                আমারই অদৃষ্ট নির্ধারক   


ভাসান


তোমারও সকাল হয়, তোমারও রাত্রি নামে, পৃথিবীর অমোঘ নিয়ম

তোমার জানালা দিয়ে কাছে বা দূরত্বে রাখো ফুটে ওঠা রোদ ডালপালা 

রেখেছি দুহাত আর মেলেছি মুগ্ধ চোখ, তুমি জানো? না জানলেও চলে

লিখিত প্রতিটি শব্দ, তারও বেশি অলিখিত

                    ভেসে গেছে কবেকার জলে ...

Comments