বিদুর ব্লগজিন।। সুবর্ণকান্তি উথ্থাসনী-র কবিতা।
সুবর্ণকান্তি উথ্থাসনী-র কবিতা
প্রেমসূত্রতা
অতিকায় স্তব্ধতার ভিতর দুপুরের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ছোটো
হয়ে আসে
চায়ের ধোঁয়া এসে ধাক্কা খায় মেসবাড়ির বাদামী
ছায়ায়
এমন ঠুনকো দৃশ্যের সম্মুখে পিঠ রেখে শুই
পরিত্যক্ত ঘাটে উপুড় হয় অস্পর্শী পাটাতন
দু'টি বুভুক্ষু ঘুঘু আমান্ন খায়
একটি তৃষ্ণার্ত শামুক সিন্নি শুষে
প্রত্নতত্ত্ব খুঁড়ে চলে দাহশ্রান্ত যমুনায়
নতজানু চোখে অপ্রাপ্ত নারীর কলস্ ভেসে বেড়ায়
মাথার কাছে ফলিত তুলসী গাছটি দীর্ঘতর হয়
দৈর্ঘ্যের মধ্যে রয়েছে মৃদু উপাসনাগৃহ
স্তব্ধতা থেকে নীরবতাকে বিচ্ছিন্ন করেছে
একটি বালিহাঁস ঝাঁপ দিলে ঢের প্রতিধ্বনিত গোধূলি
ছলকে ওঠে
গোধূলির অনিশ্চিয়তায় পথ হারিয়ে যেও না
দিকচিহ্ন
যে-পথে হেঁটেছে বণিক সে তোমার স্নান
সে-পথে ঘন্টার ধ্বনি লোনাকীর্ণ রিপু
দাহ্য তামা বিঁধে আছে মাস্তুলের বুকে
অতিশয় সংবেদী নাবিকের পাপে
বণিকের তৃষ্ণা নিয়ে শুয়ে আছে প্রেম
ও বণিক পোষ্য নয় পণ্যমাত্র সার
তুমি যে আমার নও সে কথা জেনেও
তোমাকে খুঁজতে কেন পর্যটক হই
আমার অতীত জন্ম কিশোর নিমাই
অচলায় বস্ত্র ফেলে নদীতে নেমো না
ডুব শেকড়ের ভাঁজে নেমেছে প্রদোষ
পায়েসের বাটি হাতে ইরা হেঁটে যায়
পরিযায়ী
সমস্ত সূর্যালোক শুষে রাস্তা পেরোচ্ছে তৃণভূমির
প্রাদেশিকতা
টুপি পরা লোকগুলি অহেতুক দুপুর হাতড়ে কবরখানায়
নিদ্রাহীন শুয়ে আছে চুপ
নরপিশাচের থাবা মাটি লেগে আছে
ফুঁড়ে তুমি উঠলে কেন পিচ্ছিল যোনি
বৃক্ষ তত আগ্রাসী কী নগরীর মতো
প্রতিটি কোটরগর্ভে রথের চাকার
দগদগে ক্ষত
ছায়া নয় তৃষ্ণা নয় অতিক্রম করে গেছে বুভুক্ষু
কুঠার
কাঁটাতার খুবলে নিচ্ছে ট্রেনের আলো
উনুনের আঁচে রুটি সেঁকছি
শরীর এলাও
যেভাবে সবুজ শুষে দেবতাও ফিরেছেন গুহায় নিপুণ
Comments
Post a Comment