বিদুর ব্লগজিন।। তৃণলতা কুরচি-র কবিতা।
তৃণলতা কুরচি-র কবিতা
বুদ্ধপূর্ণিমা
আজ বুদ্ধপূর্ণিমা,
আকাশ ভোলেনি
হাসপাতালের ব্যালকনিতে
উঁকি দিয়ে ডাকছে
প্রাপ্ত বয়সী চাঁদ
কোন সে-গোপন চেপে
আছে চাঁদের কমলাকোয়া ঠোঁট
কী ব্যথা বক্ষ-খাঁজে
লুকিয়ে, জ্বালিয়ে দিচ্ছে পৃথিবীর শরীর!
দৃষ্টির সীমানায়
লাল হয়ে ঝুঁকে আছে কৃষ্ণচূড়ার ডাল
বাতাসদোলে ঘুম পাড়ানি
গান গাইছে পাতারদল
সেই দোলে কেন কম্পিত
হচ্ছে পাঁজরের হাড়
অন্তর্যামী তুমি
ব'লে দাও
কোন ভুখাবেদনায় কাঁদছে
ইন্দ্রিয় আজ?
তবে কি তথাগত প্রতীক্ষারত সিঙ্গার-শুশ্রূষার!
উপাখ্যান
জেনেছি আত্মিক যোগে
বসন্ত শেষে তুমি
হয়েছ শীরিষ বৃক্ষ প্রতিরূপ
তারই ফুলের ন্যায়,
কোমল না-দীর্ঘ ঝাকড়া চুল গুলো
দক্ষিণা বায়ে ঘ্রাণ
ছড়াচ্ছে মুহুর্মুহু
খুব ক'রে দেখতে ইচ্ছে
হওয়ায় সন্ধ্যার মুখে পথে নেমেছিলাম
যখন তন্নতন্ন খুঁজছি
তিন মিটার দূরে দাঁড়িয়ে
তুমি
একটা উডপেকার ঠুকরে
নিচ্ছে তোমার বাকল
স্কন্ধ বেয়ে বুকের
বাঁপাশ দিয়ে এসে ১টা দীঘলসাপ
তোমার ঠোঁট ছুঁয়ে
মাথায় কুণ্ডলী পাকিয়ে বসতেই
তৎক্ষনাৎ বিদ্যুৎ
চমকে উড়ে গেল উডপেকার
আর্তস্বরে চোখ মেলে
তুমি যাকে দেখলে, সে-আমি
টেলিপ্যাথি
টেলিপ্যাথি নির্মাণ
হয়-না তিন টুকরো মাংসপিন্ডে
সপাটে খুলে দিতে
হয় অন্তরাত্মা, এবং তিনশগ্রাম
হৃৎপিণ্ড দিয়ে নির্মাণ
করতে হয়
মিলিয়ন বর্গমাইল ভূমণ্ডল
তুমি কাকে বলো ভালোবাসা,
কী সে-প্রেম?
সমস্তটাই বিভ্রম,
যদি অসীমের নাভিকূপ ভেদ করে
না-ই ছোঁয় তোমায়–
আমার অনন্ত শয্যার সৌরভ
দৃষ্টিতে বিঁধে থাকা
কায়া জানে:
চোখ-দিঘিতে ছলাৎ-ছলাৎ
ডুবসাঁতার
সে আদরে ডুবে আবার
ভাসে রোজ
পূর্ণিমায় সে-ই তো
শঙ্খ বাজায়,
নোনা জলে শ্বাস নেয়
গহীন ভিতর!
Comments
Post a Comment